নরসিংদীর পলাশের ডাংগা ইউনিয়ন যুবদলের সভাপতি মনিরউজ্জামান মনির কারামুক্ত হয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (১৭ জুলাই) বিকালে নরসিংদী জেলা কারাগার থেকে তিনি মুক্ত হন বলে জানান কারা কর্তৃপক্ষ ও মনিরউজ্জামান মনিরের স্বজনরা।
মনিরউজ্জামান মনিরকে বরণ করে নিতে সকাল থেকে নরসিংদী জেলা কারাফটকের সামনে ফুলের মালা ও গাড়িবহর নিয়ে অপেক্ষায় ছিলেন দলীয় নেতাকর্মী, অনুসারী কর্মী-সমর্থক ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা। কারাগার থেকে বের হওয়ার পর উৎসবমুখর পরিবেশে রাজকীয় সংবর্ধনা দিয়ে নেতাকর্মীরা তাকে বরণ করে নেন।
পরে মনিরউজ্জামান মনির দলীয় নেতাকর্মী,অনুসারী কর্মী-সমর্থক ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের নিয়ে নরসিংদীর ভেলানগর জেলা কারাফটকের সামনে থেকে ঢাকা- সিলেট মহাসড়ক দিয়ে সাহেপ্রতাপ-পাঁচদোনা-ডাংগা-কালীগঞ্জ সংযোগ সড়কসহ ও নিজ এলাকায় শোডাউন করেন এবং শুভেচ্ছা বিনিময় করেন। এতে ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ও পাঁচদোনা-ডাংগা-কালীগঞ্জ সংযোগ সড়কসহ এবং সড়কের আশেপাশ তীব্র যানজট সৃষ্টি হয়।
প্রত্যক্ষদর্শীরা জানান, ঢাকা-সিলেট মহাসড়ক ও পাঁচদোনা-ডাংগা-কালীগঞ্জ সংযোগ সড়কটির ঢাকামুখী লেনের ওপর মনিরউজ্জামানের নেতা-কর্মীদের গাড়িবহরের উপস্থিতির কারণে যান চলাচল সম্পূর্ণ বন্ধ ছিল।
পরে দলীয় নেতাকর্মী,অনুসারী কর্মী-সমর্থক ও শুভাকাঙ্ক্ষীরা ডাংগা বাজার ও হাসানহাটায় ফুল দিয়ে সংবর্ধনা জানান।
যুবদল নেতা মনিরউজ্জামান মনির বলেন, সত্যের জয় হয়েছে, মিথ্যার পরাজয় হয়েছে। আমরা শহীদ রাষ্ট্রপতি জিয়াউর রহমানের সৈনিক। সততা ও আদর্শ নিয়ে রাজনীতি করি। সকল অপশক্তি বিরুদ্ধে লড়াই চলবে। আমার বিরুদ্ধে আনিত সকল অভিযোগ যড়যন্ত্রমূলক, উদ্দেশ্য প্রণোদিত, বানোয়াট, মিথ্যা ভিত্তিহীন। আমি এর সুষ্ঠু বিচার দাবি করছি। বিএনপির স্হায়ী কমিটির সদস্য,সাবেক সফল মন্ত্রী ও এমপি ড. আব্দুল মঈন খান স্যার ও বিএনপি নেতা বাহাউদ্দীন ভূইয়া মিল্টন সহ দলীয় নেতাকর্মী ও শুভাকাঙ্ক্ষীদের কৃতজ্ঞতা ও ধন্যবাদ জানান।
তিনি আরো বলেন, আগামীকাল শুক্রবার (১৮ জুলাই) পাঁচদোনায় ড. আব্দুল মঈন খান স্যারের জনসভায় যোগদান ও সফল করার জন্য দলীয় নেতাকর্মী প্রতি আহ্বান জানান ও একসময় একসাথে যাওয়ার কথা বলেন তিনি।
উল্লেখ্য: গত ৩ জুলাই পলাশ উপজেলার ডাংগা ইউনিয়নে নির্মাণাধীন কনফিডেন্স সিমেন্ট কারখানায় সশস্ত্র হামলার ঘটনায় মনিরউজ্জামান মনিরকে প্রধান আসামি করে চাঁদাবাজির মামলা দায়ের করে প্রতিষ্ঠান কর্তৃপক্ষ।
এ মামলায় ৫ জুলাই রাতেই তাকে গ্রেপ্তার করে পুলিশ, এবং ৬ জুলাই তাকে আদালতে সোপর্দ করা হয়।
এরপর (৮ জুলাই) মনিরউজ্জামান মনিরকে কোর্টে তোলা হলে, তাঁর মুক্তির দাবিতে বিক্ষোভ মিছিল করে হাজারো বিএনপির নেতাকর্মীসহ জনসাধারণ।
একই দিনে মঙ্গলবার (৮ জুলাই) দুপুরে জেলা যুবদলের সহ-দপ্তর সম্পাদক নাজমুল ইসলাম সুমন স্বাক্ষরিত এক প্রেস বিজ্ঞপ্তিতে মনিরউজ্জামানকে দল থেকে বহিষ্কার করা হয়। বিজ্ঞপ্তিতে অভিযোগ করা হয়েছিল, তিনি দলীয় আদর্শবিরোধী কার্যকলাপে লিপ্ত ছিলেন।
তবে বহিষ্কার নিয়ে দেখা দেয় তীব্র বিতর্ক। জেলা যুবদলের সাধারণ সম্পাদক হাসানুজ্জামান সরকার হাসান জানান, তার অনুমতি ছাড়া এ ধরনের সিদ্ধান্ত দলীয় গঠনতন্ত্র লঙ্ঘনের শামিল। প্রশ্ন উঠেছে সহ-দপ্তর সম্পাদক সুমনের ভূমিকা নিয়েও। অনেকেই মনে করছেন, দলীয় কোন্দল থেকেই এই আদেশ এসেছিল এবং তা দলীয় শৃঙ্খলার পরিপন্থী ছিল।
এদিকে মনিরউজ্জামান মনিরের বহিষ্কারের খবরে স্হানীয়দের মাঝে চরম ক্ষোভ ও নিন্দার ঝড় উঠে।
শেষপর্যন্ত বুধবার, কেন্দ্রীয় যুবদলের হস্তক্ষেপে মনিরউজ্জামান মনিরের বহিষ্কারাদেশ বাতিল হয় এবং তিনি পুনরায় দায়িত্বে ফিরেন।