নরসিংদী আদালত প্রাঙ্গনে শেখ মুজিবের ম্যুরাল ভাংচুর করেছে বিক্ষুদ্ধ ছাত্র-জনতা। এ সময় আদালতে আনা আসামি নিষিদ্ধ সংগঠন ছাত্রলীগের নেতাদের ওপরও হামলা করা হয়েছে বলে প্রত্যক্ষদর্শীরা জানিয়েছেন।
বৃহস্পতিবার (৬ ফেব্রুয়ারি) দুপুরে নরসিংদী জেলা ও দায়রা জজ আদালত প্রাঙ্গণে এসব ঘটনা ঘটে বলে নরসিংদী আদালতের পুলিশের পরিদর্শক খন্দকার জাকির হোসেন জানান।
প্রত্যক্ষদর্শীরা বলছেন, গত ৩ ফেব্রুয়ারি সন্ত্রাসবিরোধী আইনে গ্রেপ্তার হওয়া জেলার বিভিন্ন উপজেলার ১০ ছাত্রলীগ নেতার রিমান্ড শুনানির দিন বৃহস্পতিবার ধার্য ছিল। শুনানিকে কেন্দ্র করে সকাল থেকে আদালত প্রাঙ্গণে বিক্ষুব্ধ ছাত্র-জনতা জড়ো হতে শুরু করে। এ সময় নিষিদ্ধ ঘোষিত ছাত্রলীগের বিরুদ্ধে বিভিন্ন স্লোগান দেন তারা । পরে আদালতে প্রবেশ করানোর সময় আসা কয়েকজন ছাত্রলীগের নেতাকর্মীদের পুলিশের বাধা উপেক্ষা করেই হামলা করা হয়।
আদালতে হামলার শিকার ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীরা হলেন- মাধবদী থানা ছাত্রলীগের সভাপতি মাহবুব হোসেন মনির (২৮), শিবপুর উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক ফাজায়েল ভূঁইয়া রয়েল (২৫), বেলাব উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক তৌফিক ভূঁইয়া (২৮), পলাশ উপজেলা ছাত্রলীগের সাধারণ সম্পাদক আরিফুল ইসলাম আরিফ (৩০), ঘোড়াশাল পৌর ছাত্রলীগের সভাপতি কামরুল হাসান (২৮), পলাশের জিনারদী ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি তারেক আকন্দ (২৮), পলাশের শিল্পাঞ্চল কলেজ শাখা ছাত্রলীগের সভাপতি জাহিদ হাসান (২৫), পলাশ থানা ছাত্রলীগের সদস্য রাজু মিয়া (৩১), শিবপুর থানা ছাত্রলীগের সদস্য ফরহাদ আফরাদ (১৮), মনোহরদী থানা ছাত্রলীগের সদস্য জাহিদ মোল্লা (২৪) এবং পলাশের ডাংগা ইউনিয়ন ছাত্রলীগের সভাপতি আমিনুল ইসলাম (২৬)।
এরপর আদালত প্রাঙ্গণে থাকা ৫ আগস্টের পর আংশিক ভাঙচুর হওয়া শেখ মুজিবুর রহমানের ম্যুরালটিও আবার ভাঙচুর করা হয় বলে জানান তারা।
তবে মারধর করার বিষয়টি অস্বীকার করেছেন পরিদর্শক খন্দকার জাকির হোসেন। তিনি বলছেন, আসামিদের আদালতে ঢোকানোর সময়ের আগে থেকেই সেখানে অবস্থান নেওয়া ছাত্র- জনতা বিভিন্ন স্লোগান দেয় এবং আসামিদের ওপর হামলার চেষ্টা করে। কিন্তু পুলিশের নিরাপত্তায় তা করতে পারেননি।
পরে গ্রেপ্তার ছাত্রলীগের নেতা-কর্মীদের দ্রুত আদালতের হাজতখানায় নেওয়া হয়। আদালত প্রাঙ্গণে জোরদার করা হয় নিরাপত্তা ব্যবস্থা।
আদালত পুলিশের এ কর্মকর্তা বলেন, পরে বেলা দেড়টার দিকে সন্ত্রাসবিরোধী আইনের মামলায় গ্রেপ্তার ১০ ছাত্রলীগ নেতা-কর্মীকে নরসিংদীর অতিরিক্ত জ্যেষ্ঠ বিচারিক হাকিম নাহিদ নিয়াজির আদালতে তোলা হয়। এ সময় তাদের জিজ্ঞাসাবাদের জন্য সাতদিনের রিমান্ড আবেদন করে পুলিশ। শুনানি শেষে বিচারক তা মঞ্জুর করেন।