নরসিংদীতে জুলাই গণঅভ্যুত্থান উপলক্ষে বিএনপির সহযোগী সংগঠন কৃষকদলের আয়োজনে বৃক্ষরোপন কর্মসূচী পালন করা হয়।
এরই পরিপ্রেক্ষিতে তারা আবদুল কাদির মোল্লা সিটি কলেজের মাঠে বৃক্ষরোপন করার সময় মানবিক বিভাগের কয়েকজন শিক্ষার্থী ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেয়। এ ঘটনায় উপস্থিত নেতাকর্মী ও শিক্ষার্থীদের মধ্যে উত্তেজনা তৈরি হলে আপাতত ১০ শিক্ষার্থীকে ক্লাস বর্জনসহ সাময়িক বহিস্কারের সিদ্ধান্ত নেয় কলেজ কর্তৃপক্ষ। পাশাপাশি তিন সদস্য বিশিষ্ট তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে বলে নিশ্চিত করেছেন অধ্যক্ষ হেরেম উল্যাহ আহসান।
জেলা বিএনপির কৃষি বিষয়ক সম্পাদক সফিকুল ইসলাম আপেলের সভাপতিত্বে বৃক্ষরোপন কর্মসূচীতে প্রধান অতিথি হিসেবে উপস্থিত ছিলেন বিএনপির যুগ্মসহাসচিব ও জেলা বিএনপির সভাপতি খায়রুল কবির খোকন।
কলেজের প্রশাসনিক সূত্র জানায়, কলেজে কোন রাজনৈতিক সংগঠন কিংবা রাজনৈতিক চর্চা হয় না। আজ রবিবার বিভিন্ন শিক্ষাপ্রতিষ্ঠানে এইচএসসি পরীক্ষা কেন্দ্র হওয়ায় বিএনপি নেতৃবৃন্দ বৃক্ষরোপন কর্মসূচীর ভেন্যু হিসেবে আমাদের কলেজ মাঠকে বেছে নেয়।
তাদের কর্মূসূচী চলাকালে কয়েকজন শিক্ষার্থী আওয়ামী লীগের দলীয় স্লোগান দেয়। এতে করে বিশৃঙ্খলা পরিস্থিতি তৈরি হয়। এরই পরিপ্রেক্ষিতে কলেজ কর্তৃপক্ষ প্রাথমিকভাবে অভিযুক্ত মানবিক বিভাগের ১০ জন শিক্ষার্থীকে আপাতত ক্লাস বর্জনসহ সাময়িক বহিস্কারের সিদ্ধান্ত নেয়। পাশাপাশি তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করে। তদন্ত প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে স্থায়ী বহিস্কারের সিদ্ধান্ত গ্রহন করা হবে। এব্যাপারে আগামি শনিবার অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদেরকে অভিভাবকসহ কলেজে উপস্থিত হওয়ার নির্দেশনা প্রদান করা হয়েছে।
এদিকে প্রত্যক্ষদর্শী কয়েকজন জানান, দলীয় লোকজনের বাইরে কর্মসূচীতে এক প্রকার জোর করে কয়েকজন বখাটে যুবক কলেজে প্রবেশ করে। কর্মসূচী চলাকালে তারা কলেজের মানবিক বিভাগের মেয়ে শিক্ষার্থীদেরকে আপত্তিমূলক মন্তব্য করে। এতে কলেজের ছেলে শিক্ষার্থীরা প্রতিবাদ জানালে ওই বখাটেরা কলেজকে আওয়ামী লীগের কলেজ হিসেবে আখ্যা দিয়ে বাকবিতন্ডায় জড়ায়। এসময় বিক্ষুব্ধ কয়েকজন ছাত্র শুধু ‘জয় বাংলা’ স্লোগান দেয়। এতে বিএনপির নেতৃবৃন্দসহ ওই যুবকরা উত্তেজিত হয়ে শিক্ষার্থীদের উপর চড়াও হলে বিশৃঙ্খলা পরিস্থিতির সৃষ্টি হয়। এসময় কলেজের অধ্যক্ষ হেরেম উল্যাহ আহসান পরিবেশ নিয়ন্ত্রণে আনতে শিক্ষার্থীদেরকে শাসন করেন।
কলেজের অধ্যক্ষ হেরেম উল্যাহ আহসান বলেন, যেহেতু এই কলেজটিতে কোন প্রকার রাজনীতিক চর্চা করতে দেওয়া হয় না। সেখানে আমাদের ছাত্ররা কেন রাজনৈতিক স্লোগান দিবে? তারই পরিপ্রেক্ষিতে প্রাথমিকভাবে অভিযুক্ত শিক্ষার্থীদেরকে ক্লাস বর্জনসহ সাময়িক বরখাস্ত করা হয়েছে। এঘটনায় তিন সদস্য বিশিষ্ট একটি তদন্ত কমিটি গঠন করা হয়েছে। তদন্ত প্রতিবেদনের প্রেক্ষিতে প্রয়োজনীয় ব্যবস্থা নেওয়া হবে। এছাড়া আগামী শনিবার শিক্ষার্থীদেরকে তাদের অভিভাবকসহ কলেজে উপস্থিত থাকার নির্দেশ দেওয়া হয়েছে।